Wellcome to National Portal
Main Comtent Skiped

Title
Bulletin
Details

গত কয়েক দিন মাঝারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং নেপাল এবং ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশে বন্যার পানি নিম্নমুখী হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অনেক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজমান। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দন্ডায়মান ফসল, গবাদীপশু, হাসঁ-মুরগী এবং মস্য ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ক কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ নিম্নে দেয়া হলো:

ধান চাষের ক্ষেত্রে পরামর্শ:

১. জমি থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। মূল জমির পানি নেমে গেলে চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পূর্বে ছত্রাকনাশক (কার্বান্ডাজিম) এবং/অথবা কীটনাশক (সাইপারমেথ্রিন) ৥ ১-২ মিলি/ লিটার পানিতে মিশিয়ে চারার শিকড় শোধন করে নিতে হবে।

২. সংশ্লিষ্ট জেলার বেশীর ভাগ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং দন্ডায়মান আমন ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার পানির কারণে মূলজমি বা বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় চারা রোপণের জন্য ১লা আগষ্টের মধ্যে স্বল্প মেয়াদী জাত (ব্রি ধান-৩৩, ব্রি ধান-৩৯, ব্রি ধান-৬২, ব্রি ধান-৬৬, ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-৭৫) কিংবা মধ্য মেয়াদী জাত (বিআর -২৫, ব্রি ধান-৩৪, ব্রি ধান-৩৭, ব্রি ধান-৩৮, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭০, ব্রি ধান-৭২, ব্রি ধান-৭৯, ব্রি ধান-৮০) বীজ নিয়ে বীজতলায় চারা তৈরী করতে পরামর্শ দেয়া হলো।

৩. বন্যার পানি সরে গেলে উপযুক্ত বয়সের  চারা রোপণ করতে হবে।

৪. যেখানে বন্যার পানি দ্রুত সরছে না সেখানে ভাসমান বীজতলা তৈরীর পরামর্শ দেয়া হলো।

৫. পুনরায় বন্যা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জলমগ্ন সহিষ্ণু জাতের ধান নির্বাচন করতে হবে (ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭৯, বিনা ধান-১১, বিনা ধান-১২)।

৬. কৃষক ভাইদের তাদের জমির আইল সংষ্কার অথবা পুনরায় নতুন করে বাধাঁর পরামর্শ দেয়া হলো। এটা জমি কর্দমাক্ত করতে       এবং চারা রোপণে সাহায্য করবে।

৭. বন্যা পরবর্তী সময়ে (পানি সরে গেলে) বেশী বয়সের চারা রোপনের জন্য সম্মিলিতভাবে বীজতলা তৈরী করা যেতে পারে।

 ৮. ২১-২৫ দিনের চারা এবং ১৫সেমি * ১৫ সেমি দূরত্বে রোপনকরার পরামর্শ দেয়া হলো।

৯. অপেক্ষাকৃত বয়স্ক চারা রোপণের ক্ষেত্রে বেশী সংখ্যক চারা (৪-৫ টি চারা/গোছা) ঘন করে ২০ সেমি * ১৫ সেমি দূরত্বে রোপণ করার এবং অনুমোদিত মাত্রায় সার প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হলো।

১০. রোপিত রোপা আমনের চারা সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গেলে সংরক্ষিত বেশী বয়সের চারা (৫০-৬০ দিনের চারা) রোপণ করা যেতে পারে।

১১. আলোক অসংবেদনশীল এবং স্বল্পমেয়াদী জাত (বিনা ধান-০৭, বিনা ধান-১৬, বিনা ধান-১৭) সরাসরি বপনের পরামর্শ দেয়া হলো।

১২. আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ জমিতে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের পর কুশি পর্যায়ে ১/৩ নাইট্রেজেন+ ৫০% পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করুন।

অন্যান্য ফসল:

১. সব্জির জমি থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করুন।

২. বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর আগাম শীতকালীন সব্জি চাষ শুরু করুন।

৩. কৃষকের নিকট মজুতকৃত/সংরক্ষিত ডাল ও তেল বীজ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে রোদে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হলো যাতে পরবর্তীতে যথাসময়ে সুস্থ ও সবল বীজ বপন করা যায়।

 

স্য চাষের ক্ষেত্রে পরামর্শ:

সম্প্রতি জেলার সর্বত্র বন্যার কারণে মাছ চাষীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পুকুরের বেশীর ভাগ মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। পুকুর থেকে বন্যার পানি নিষ্কাশনের পর নতুন পোনা ছাড়ার পূর্বে নিম্নোক্ত কাজ গুলি করার পরামর্শ দেয়া হলো:

১. পুকুরে প্রতি বিঘায় ৩০ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করুন।

২. বন্যার কারণে মাছ যাতে ভেসে যেতে না পারে সেজন্য সম্ভব হলে  পুকুরের চারদিকে জাল দিয়ে ঘিরে দিতে হবে।

৩. আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

৪. বন্যার কর্দমাক্ত পানির কারণে পুকুরে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে, তাই বাঁশ দিয়ে পুকুরের পানি নেড়ে দিতে হবে।

গবাদীপশুর ক্ষেত্রে পরামর্শ:

১. সবুজ ঘাসের পাশাপাশি ভিটামিন এবং খনিজ লবন সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে।

২.ঘাস পাওয়া না গেলে ইপিলইপিল, সজনা, কলা, বাশঁ, আম এবং কাঁঠাল পাতা দেয়া যেতে পারে।

হাসঁ-মুরগীর ক্ষেত্রে পরামর্শ:

১.বন্যার কারনে হাঁস-মুরগীর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই দেখা দিতে পারে। তাই খাবারের সাথে অক্সি-টেট্রাসাইক্লিন পাউডার মিশিয়ে হাঁস-মুরগীকে খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হলো।

২.পরির্বতিত আবহাওয়াতে হাঁস-মুরগীর ভাইরাস জনিত রোগ দেখা দিতে পারে। সেজন্য সুষম খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এবং খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

৩. দানাদার খাবারের সাথে সাথে রান্নার বর্জ্য এবং ভিটামিন ও খনিজ হাসঁ- মুরগীকে দিতে হবে।

Attachments
Publish Date
22/07/2019
Archieve Date
03/08/2019